,

অন্তঃসত্ত্বা নারীর শ্বাসকষ্ট

সময় ডেস্ক : গর্ভধারণকালে একজন নারীর স্বাস্থ্যগত নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে। আবার আগে থাকা কিছু রোগ যেমন হাঁপানি, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ—এই সময় জটিল হয়ে উঠতে পারে। শীতে সাধারণ মানুষের যেমন শ্বাসকষ্টের সমস্যা বাড়ে, তেমনি শ্বাসকষ্টে আক্রান্ত হতে পারেন একজন অন্তঃসত্ত্বা নারীও। এ বছর তীব্র শীতে অনেক অন্তঃসত্ত্বা নারী শ্বাসকষ্টে ভুগছেন। একজন অন্তঃসত্ত্বা মায়ের শ্বাসকষ্টের পেছনে হাঁপানি ছাড়াও অনেক কারণ থাকতে পারে। যেমন : হৃদ্রোগ, রক্তশূন্যতা, নিউমোনিয়া ইত্যাদি। প্রি-একলাম্পসিয়ার (রক্তচাপ বেশি ও প্রস্রাবের সঙ্গে আমিষ নির্গত হওয়া) জটিলতা।
হাঁপানি কী : হাঁপানি হলো শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহজনিত দীর্ঘমেয়াদি একটি রোগ, যেখানে অত্যধিক সংবেদনশীলতার কারণে শ্বাসনালির ছিদ্রপথ সরু হয়ে যায়। ফলে আক্রান্ত রোগীর শ্বাসকষ্ট, কাশি ও বুকে বাঁশির মতো শব্দ হয়। সাধারণত বংশগত কারণেই এ রোগ হয়। এ ছাড়া ফুলের রেণু, ধুলা–ময়লা, ধোঁয়া, কুয়াশা, পশম ইত্যাদির প্রতি অত্যধিক সংবেদনশীলতার কারণে এ রোগের মাত্রা বাড়ে। অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের মধ্যে শতকরা পাঁচ থেকে আটজন এ রোগে আক্রান্ত হন।
নির্ণয় : সাধারণত রোগীর ইতিহাস বিশ্লেষণ ও শারীরিক পরীক্ষা করে হাঁপানি নির্ণয় করা হয়। এ ছাড়া স্পাইরোমেট্রি নামের পরীক্ষার মাধ্যমে এ রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়।
গর্ভাবস্থায় হাঁপানির প্রভাব : গর্ভাবস্থায় হাঁপানি নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মায়ের শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় এবং মা ও বাচ্চার শরীরে অক্সিজেনের ঘাটতি হয়। ফলে বাচ্চা আকারে ছোট হওয়া, অপুষ্টিতে ভোগা, সময়ের আগে মায়ের প্রসবব্যথা শুরু হওয়া, পানি ভাঙা, উচ্চ রক্তচাপ, প্রি-একলাম্পসিয়া; এমনকি মা ও বাচ্চার মৃত্যুর কারণ হতে পারে।
চিকিৎসা : শুরু থেকেই একজন বক্ষব্যাধিবিশেষজ্ঞ ও একজন স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞের যৌথ পরামর্শে নিম্নলিখিত উপায়ে চিকিৎসা নিতে হবে। হাঁপানি উদ্রেককারী নিয়ামকগুলো যতটুকু সম্ভব এড়িয়ে চলতে হবে। নিয়মিত ইনহেলার ব্যবহার করতে হবে। মুখে খাওয়ার ওষুধ যেমন মন্টিলুকাস্ট, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যামাইনোফাইলিন ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। প্রয়োজনে নেবুলাইজার লাগতে পারে। বিশেষ ক্ষেত্রে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়া হয়। মনে রাখতে হবে, হাঁপানির চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো কার্যকারিতা নেই। হাঁপানির চিকিৎসায় ইনহেলার সবচেয়ে উপকারী ও আধুনিক চিকিৎসাপদ্ধতি। বিভিন্ন ধরনের ইনহেলার আছে যেমন সালবুটামল, সালমেটেরল ও স্টেরয়েড ইত্যাদি।


     এই বিভাগের আরো খবর